স্পেনকে হারিয়ে নেশন্স লিগ চ্যাম্পিয়ন রোনাল্ডোর পর্তুগাল

সায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় / 09-06-2025

২০১৬ সালে ইউরো জিতেছিল পর্তুগাল। ২০১৯ সালে জিতেছিল নেশন্স লিগ। ৬ বছর অপেক্ষার পরে সেই নেশন্স লিগ জিতেই ট্রফির খরা কাটাল পর্তুগাল।স্পেনকে হারিয়ে ২০১৯ সালের পর ২০২৫ এ এসে দ্বিতীয়বার নেশনস লিগের শিরোপা জয় করলেন। তবে ফুটবলপ্রেমীদের কাছে এই ম্যাচটা ছিল রোনাল্ডো বনাম ইয়ামাল ডুয়েল।

আর সেই লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসলেন ক্রিস্তিয়ানো রোনাল্ডো। একদিকে চল্লিশের রোনাল্ডো। অন্যদিকে, সতেরোর ইয়ামাল। শেষহাসি কে হাসবে, সেদিকেই ছিলো সবার নজর। প্রচলিত আছে চল্লিশেই নাকি চালশে, কিন্তু সেই সবের ধ্বজা উড়িয়ে যৌবনের পাঠ শেখালেন রোনাল্ডো। আর তাতেই বাজিমাত পর্তুগালের।

এদিন ম্যাচের শুরু থেকে আক্রমণে গতি বাড়ান পেদ্রি, ইয়ামালরা। ম্যাচের ১৫ মিনিটে সহজ সুযোগ মিস পেদ্রির। সুযোগ নষ্ট করেন ‘সতেরোর বিস্ময়’ ইয়ামাল। ২১ মিনিটে ইয়ামালের বক্সে বাড়ানো বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন পর্তুগালের ডিফেন্ডাররা। জটলার মাঝে বল পেয়ে গোল করেন মার্তিন জুবিমেন্দি। যদিও এই আনন্দ বেশিক্ষণ স্থায়ী থাকেনি স্পেনীয়দের। খেলার গতির বিরুদ্ধে গিয়ে ২৬ মিনিটে নুনো মেন্ডেজের গোলে সমতায় ফেরে পর্তুগাল। এই মরশুমে প্যারিস সাঁ জাঁর হয়েও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে গোল করলেও এটিই তাঁর প্রথম আন্তর্জাতিক গোল। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার ঠিক আগেই ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় তারা। পেদ্রির থেকে পাওয়া বল জালে জড়িয়ে দেন ওয়ার্জাবাল।

প্রথমার্ধে নিজেদের প্রাধান্য বিস্তার করলেও দ্বিতীয়ার্ধে পর্তুগিজদের ডাইরেক্ট ফুটবলের সামনে টিকিতাকা ফুটবল কৌশল কার্যত দুর্বল হয়ে পড়ে। ম্যাচের ৪৯ মিনিটে ব্রুনো ফার্নােন্ডজের গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। দ্বিতীয়ার্ধে জ্বলে ওঠেন ৪০ বছরের রোনাল্ডো। ৬১ মিনিটের মাথায় নুনো মেন্দেসের ক্রস ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন স্পেনের ডিফেন্ডাররা। ফিরতি বলে জোরালো ভলিতে গোল করেন রোনাল্ডো। এরপর দমে না গিয়ে সমতায় ফেরানোর চেষ্টায় মরিয়া হয়ে ওঠেন রোনাল্ডোরা। তখনই ‘বুড়ো’ হাড়ে ম্যাজিক দেখান রোনাল্ডো। একেবারে পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনার মতো সুযোগের অপব্যয় করেননি রোনাল্ডো।এই দিনের গোলের ফলে নিজের কেরিয়ারের ১৩৮তম গোল করে ফেলেন তিনি। তবে, আলাদা করে বলতেই হয় পর্তুগিজ গোলরক্ষক দিয়োগো কোস্তার কথা। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে তিনি হয়ে ওঠেন অপ্রতিরোধ্য। নিশ্চিত কিছু গোল না বাঁচালে ম্যাচের ফলাফল অন্যরকম হতেই পারত। দ্বিতীয়ার্ধে আর কোনও পক্ষই কোনও গোল করতে পারেনি। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

৩০ মিনিটের অতিরিক্ত সময়েও নিষ্পত্তি হয়নি ম্যাচের। টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচ। পর্তুগাল যখন এগিয়ে ৪-৩ ফলে, তখন স্পেনের হয়ে পেনাল্টি শট নিতে আসেন আলভারো মোরাতা। তবে তাঁর শট সঠিক অনুমান করে বাঁচিয়ে দেন পর্তুগাল গোলরক্ষক দিয়োগো কোস্তা। এর পরে রুবেন নেবেসের শট জালে জড়িয়ে যেতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন পর্তুগালের সমর্থকরা। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার নেশনস লিগের শিরোপা জিতলো পর্তুগাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *